সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:২৮ পূর্বাহ্ন
আবুল কাশেম- সিলেট জেলা প্রতিনিধিঃ
বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সিলেটের বিশ্বনাথে নৌকা মার্কার এজেন্ট হওয়ায় উপজেলা কৃষক লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল কাহার নামের এক যুবককে ধর্ষণ মামলাসহ একাধিক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করছেন।
এমন অভিযোগ এনে শনিবার ২০শে মে দুপুরে বিশ্বনাথ প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভূক্তভোগীর ছোট ভাই আব্দুল জাহিদ। তিনি পৌর এলাকার চৌধুরীগাঁও গ্রামের মৃত হাজী মহরম আলীর পুত্র।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আব্দুল জাহিদ বলেন- বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকার এজেন্ট থাকা অবস্থায় বাকবিতন্ডা হয় বিশ্বনাথ সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ সিরাজুল হকের ভাতিজা মনিরুজ্জামান মনিরের সঙ্গে।
এ ঘটনার জের ধরে নানাভাবে আমার (কাহার) ভাইকে ফাঁসানোর অপচেষ্ঠা করতে থাকেন ওই চাচা-ভাতিজা। কিছু দিন পর ২০১৯ইং সালের ২৬শে জুন চৌধুরীগাঁওয়ের যুক্তরাজ্য প্রবাসী হাজী শুকুর আলীর বাড়িতে থাকা ভাড়াটিয়া রিক্সাচালক ইরান উদ্দিনের ১৪ বছর বয়সী কন্যা শিশুকে কে-বা কারা ধর্ষণ করে।
এই ঘটনা আমার ভাই আব্দুল কাহার করেছেন বলে সাবেক অধ্যক্ষ সিরাজুল হক জনৈক নামজুল ইসলাম মকবুলকে মোবাইল ফোনে বিষয়টি জানান। নাজমুল ইসলাম মকবুল সেসময় ‘প্রতিভার কথা’ নামক একটি ফেসবুক পেজে ‘বিষয়টি উদ্বেগজনক’ শিরোনামে লেখেন।
এরপর কমেন্টে আমার ভাইকে ধর্ষণকারী হিসেবে নাম লেখা হয়। এই লেখালেখির সংবাদ থেকে ধর্ষণের ঘটনা সাজিয়ে ২০১৯ইং সালের ৩০শে জুন নির্যাতিতার মা আম্বিয়া বেগম(৪০) বাদী হয়ে আমার ভাই আব্দুল কাহারকে একমাত্র অভিযুক্ত করে বিশ্বনাথ থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন, (মামলা নং ২৬/২০১৯)।
পরদিন আমার ভাই আব্দুল কাহারকে গ্রেপ্তার করে র ্যাব। ২০২০ইং সালে ২৯শে জানুয়ারী এ মামলায় ডিএনএ টেস্টের রিপোর্টে কাহারের কোন সম্পৃক্ততা না থাকায় বিশ্বনাথ থানার এসআই রত্না বেগম আমার ভাইকে মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দিতে আদালত বরাবরে আবেদন করেন।
আটকের পর প্রায় সাড়ে ৭ মাস কারাবরণ করে জামিনে বের হন আমার ভাই (কাহার)। এরপর বাদীর বারবার নারাজির প্রেক্ষিতে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কাছে বর্তমানে মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে।
বক্তব্যে আব্দুল জাহিদ আরো বলেন- অধ্যক্ষ সিরাজুল হক ও তার ভাতিজা মনিরুজ্জামান মনিরের কুপরামর্শে আম্বিয়া বেগম মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে একাধিক মামলা দিয়ে ও বার বার নারাজি দিয়ে আমার ভাইকে ও আমার পরিবারকে অন্যায়ভাবে হয়রানি করছেন।
বর্তমানে ২০২২ইং সালের ১৯শে জুলাই মিথ্যা মারামারির মামলা (বিশ্বনাথ সিআর মামলা নং ৪২২/২২ইং) দায়ের করেন। মামলাটি বাদীর বিরুদ্ধে ২১১ ধারা মোতাবেক প্রসিকিউশন দিয়ে বিজ্ঞ আদালতে চুড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বিশ্বনাথ থানার এসআই আমিরুল ইসলাম।
ওই মামলা পুনরায় তদন্তের জন্য থানায় আসলে উৎকোচ নিয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বিশ্বনাথ থানার পরিদশক (ওসি) তদন্ত আব্দুস সালাম চলতি বছরের ৬ এপ্রিল আমাদের বিরুদ্ধে আদালতে মিথ্যা চার্জশিট দাখিল করেন।
তিনি জানান- বিশ্বনাথ সরকারি কলেজের সাবেক অ্যধক্ষ সিরাজুল হক, তার ভাতিজা মনিরুজ্জামান মনির ও জনৈক নাজমুল ইসলাম মকবুলকে আইনের আওতায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে ধর্ষণের সঠিক তথ্য বের হয়ে আসবে এবং আসল ধর্ষককে চিহ্নিত করা সম্ভব হবে।
অথবা উনারা কাকে দিয়ে ধর্ষণের ঘটনা ঘটিয়ে আমার ভাই (কাহার)’কে ফাঁসাতে চাচ্ছেন তাও বের হয়ে আসবে। এসব ঘটনায় নিরুপায় হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং দেশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে পরিবারের পক্ষ থেকে সু-বিচার কামনা করেন তিনি।
এবিষয়ে থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুস সালাম বলেন- এসআই আমিরুল ইসলামের তদন্ত রিপোর্ট ভুল থাকায় তাকে আদালত শোকজ করেন। পূনঃতদন্তে আমি ঘটনা সঠিক পেয়ে চার্জশীট আদালতে প্রেরণ করেছি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- আব্দুল জাহিদের ভাই উপজেলা কৃষক লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক ও ভূক্তভোগী আব্দুল কাহার।
এদিকে পৃথক আরেকটি সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা কৃষক লীগের সহঃ সভাপতি মারফত আলী, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হান্নান বদরুল, সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, পৌর কৃষক লীগের আহবায়ক বিকাশ মালাকার, কৃষক লীগ নেতা লিটন খান, তালেব আলী, সামসুল ইসলাম, উপজেলা মাইক্রোবাস শ্রমিক সমিতির সভাপতি ইউনুছ আলী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুহিবুর রহমান গোলাপ প্রমূখ নেতৃবৃন্দ।